জুবায়ের খন্দকার, ময়মনসিংহঃ পেশাগত দায়ীত্ব পালন করতে আজ আমি হঠাৎই মনের অজান্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢুকে পড়ি। বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে গিয়ে দাড়াই ডেঙ্গু আইসোলেশন ওয়ার্ডে। সেই ওয়ার্ড গিয়ে কথা হয় ডেঙ্গু আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকা জামালপুর জেলার সুমাইয়া আক্তার (১৭)-নামের এক কলেজ ছাত্রীর সাথে। কথা প্রসঙ্গে সুমাইয়া আক্তার আমাদের কাছে বলছিলেন তার অসহায়ত্বের কথা। বলছিলে ঠিক এইভাবে-
গত ৯ অক্টোবর পরিবারের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম রাজধানীর হাতিরঝিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম পরদিন থেকেই শরীরে জ্বর ও প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হয়। আবার বেশ কয়েকবার বমিও হয়। স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শে প্যারাসিটামল ও বমির জন্য ঔষধও খাই। তাতেও কিছু না হলে পরদিন পরিবারের সিদ্ধান্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হই। হাসপাতালের ডাক্তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেন। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আমি জানতে পাড়ি আমি ডেঙ্গুতে আক্রন্ত। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখনও সুস্থ হইনি।
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন-এখনও শরীর দুর্বল। তবে শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতির দিকে। আসলে হাতিরঝিলে গিয়েই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। বেড়াতে গিয়ে দেখি ওখানে প্রচুর মশার উৎপাত।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হলে তারা আমাদেরকে বলেন-ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ৫০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। গত বুধবার থেকে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য এই ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।
এ দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৭৭ রোগী হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ১৪৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আর আজ শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৪৯ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেন-হঠাৎ করে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ৩ তলায় ৫০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা যদি আরও বেড়ে যায় বেডের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এই হাসপাতালে ওষুধসহ সব ধরনের ব্যবস্থাপনা রয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসক ও নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ ডেঙ্গু রোগীদের সেবায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন।