নিলামের মাধ্যমে ২৫ কেজি সোনা বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব সোনা কেনার নিলামে কারা অংশ নিতে পারবেন সে তথ্যসহ পুরো নিলাম প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, অবৈধ কিংবা চোরাচালানের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দ করা সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকে। একই সময়ে এ নিয়ে চোরাকারবারি বা দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলা নিষ্পত্তির পর রায় সরকারের পক্ষে গেলেই সেসব সোনা নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনা বিক্রির এই নিলাম প্রক্রিয়ায় সাধারণ জনগণ চাইলেই অংশ নিতে পারবেন না। শুধু তারাই অংশ নেবেন যাদের সনদ রয়েছে। অর্থাৎ শুধু সনদধারী অলঙ্কার ব্যবসায়ীরাই এই নিলামে অংশ নিতে পারবেন। নিলামে সোনা প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও থাকবে। সোনার বাজার এবং জুয়েলারি ব্যবসায় স্বচ্ছতা ফেরাতে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে সোনা আমদানির লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
একটা সময় স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রধান উৎস ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের সোনা। তবে এই নিলাম প্রক্রিয়া এখন আর সহজে হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে থাকা সোনা সবসময় বিক্রি করা হয় না। নিলাম হলে বা বিক্রি করা হলে ‘সনদধারী অলঙ্কার ব্যবসায়ীরাই’ কেবল কিনতে পারেন। এর আগে সর্বশেষ ২০০৮ সালে নিলামের (অকশন) মাধ্যমে ২০ কেজির বেশি সোনা বিক্রি করা হয়।
প্রায় ১৪ বছর পর আবার সোনা বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে নিলাম প্রক্রিয়া ১৪ থেকে ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। আগ্রহী ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে দরপত্র শিডিউল ক্রয়সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।
যাচাই-বাছাই করে নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্যদের একটি তালিকা করবে ব্যাংক। যেসব সোনার বার, অলঙ্কার, টুকরা বা পাত বিক্রি করা হবে তা প্রদর্শনের ব্যবস্থাও থাকবে। কতটুকু খাঁটি তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবে নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান। বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতাকে বাজারমূল্য দিতে হয়। এর সঙ্গে পরিশোধ করতে হবে মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক) অন্যান্য রাজস্ব।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী খাতে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি সোনা রয়েছে। আর স্থায়ী খাতে রয়েছে ১৫৯ কেজি। স্থায়ী খাতের এ সোনা থেকে ২৫ কেজি বা ২ হাজার ১৭০ ভরি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নিলামে আগ্রহীদের দরপত্র জমা দিতে হবে এবং উদ্ধৃত মূল্যের আড়াই শতাংশ অর্থ বায়না জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে। পরে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে সোনা ক্রয়ের কার্যাদেশ দেওয়ার পাঁচদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সব অর্থ জমা দিতে হবে।