রনি মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন এরঁ মৃত্যুতে উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের সদস্যদের কান্না-আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।
সদা হাসি উজ্জল সবার প্রিয় নেতার এমন মৃত্যুতে শোকে নির্বাক হয়ে গেছেন নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বার বার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আকমল হোসেন, পরিচ্ছন্ন, ত্যাগী ও সৎ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
আকমল হোসেন গত ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সন্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। রাজধানীর পল্টন এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে সোমবার রাত সাড়ে ১২ টায় তিনি আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে রাত দেড়টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান ফারুক, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমেদ মুক্তা, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লালন।
সেখান থেকে মঙ্গলবার সকালে সিলেটের বাসায় মরদেহ নিয়ে আসা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতরণা ঘটে। সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় করেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট নায়েবপুল জামে মসজিদে জানাযা শেষে বেলা ১১ টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ জগন্নাথপুর আনা হয়। আকমল হোসেন ১৯৯৮ সালে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পর ২০১৪ সালে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
সর্বশেষ গত ১৬ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি আবারও সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি একজন সৎ,পরিচ্ছন্ন নির্ভিক ধৈর্যশীল আপাদমস্তক সজ্জন রাজনীতিবীদ ছিলেন। তাঁকে দেখতে সকাল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী সহ সাধারন জনতা ভিড় করেন উপজেলা পরিষদের সামনে।
বিকাল ৪ টা ১৫ মিনিটে উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
জানাযায় প্রায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী সহ সাধারন জনসাধারন উপস্থিত ছিলেন। তিনি মীরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসি গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক তালেব আলীর সন্তান আকমল হোসেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, পাচঁ ছেলে ও চার মেয়ে সহ অসংখ্য আত্নিয়স্বজন রেখে গেছেন। ১৯৯৮ সালে মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে তিনি টানা দ্বিতীয়বারের মতো মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
সে সময় ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে গোল্ড মেডেল পান। আকমল হোসেনের মৃত্যুতে তিন দিনের শোক কর্মসূচী পালন করেছে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ।
শোক কর্মসুচীর মধ্যে ছিল কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে প্রয়াতের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই তিন দিন শোক কর্মসুচী পালন করা হয়েছে।