শুক্রবার , ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. English News
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কাতার বিশ্বকাপ
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খুলনা
  9. খেলা
  10. চট্টগ্রাম
  11. চাকরি
  12. জাতীয়
  13. জীবনযাপন
  14. জোকস
  15. ঢাকা

ব্যবসায়ীদের আমল নামা

প্রতিবেদক
মোঃ আবদুর রহমান
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩ ১২:৫৮ পূর্বাহ্ণ
ব্যবসায়ীদের আমল নামা

মিডিয়ার কল্যাণে জানতে পারলাম, সম্প্রতি বৈশ্বিক খাদ্য দ্রব্যের মূল্য গত ২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। কিন্তু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বাজার গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আলু, ডিমের বাজার একই হাল। বাংলাদেশের কালোবাজারির ইতিহাস দীর্ঘ দিনের। এই সিন্ডিকেট চক্রের সাথে আমদানিকারক থেকে ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী পর্যন্ত; সবাই জড়িত। কিছু বাস্তব উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিস্কার হবে।

গত বছর তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথে বাজার থেকে তেল উধাও হয়ে গেল। এত তাড়াতাড়ি উধাও হওয়ায় অবাক হয়ে মার্কেটিং এর সাথে জড়িত একজনের মাধ্যমে জানতে পারলাম, আমাদের থানায় যে তেল মজুদ ছিল, তাতে পরবর্তী ৬ মাস অনায়াসে চলতো। এটা গেলো এক চিত্র। সাম্প্রতিক সময়ে সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমায়, সেই পুরানো রাজনীতি শুরু হয়েছে।দাম কমায়, এখন আগের দাম থেকে বেশি দামেও গ্যাস পাওয়া যায় না। এই গেলো বড়দের কারসাজি।

এবার আসি ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের কথায়। এনারাও সুযোগ পেলে কি পরিমাণ জুলুম করতে পারে তা ডাবের বাজার থেকে অনুমেয়। তারপরেও আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। গত সপ্তাহে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঢাকা গিয়েছিলাম। পৌঁছাতে রাত প্রায় ১০.৩০। শনি আখড়া এক ফলের দোকানে গেলাম। দোকানদার আমাকে গ্রীন মাল্টা দেখিয়ে বলল, এটা দেশি। বিদেশিটার থেকে মিষ্টি বেশি হবে। বিদেশিটা ২৬০ টাকা, দেশিটা ১২০ টাকা। আমি আসলে আগে কখনো গ্রীন মাল্টা ক্রয় করিনি। তাই দাম বা স্বাদ কোনটাই জানতাম না। তাই ওনার কথায় কনভিন্স হয়ে দেশি ও ভালো বলায়, গ্রীন মাল্টা কিনলাম। বাসায় পৌঁছলে ঐ মাল্টা মুখে দিয়েতো অবাক। মন চাইছিলো নিজের গালে নিজে চড়াই। ১২০ টাকা দিয়া এগুলো মানুষ কেন কিনে। ঘটনা এ পর্যন্ত শেষ হলে পারতো। কিন্তু গ্রামে এসে শ্বশুর বাড়ী গেলাম। ঐ বাড়ীতে গ্রীন মাল্টা এনেছে বরিশাল সদর থেকে। কেজি নিয়েছে ৬০ টাকা। আমিত আকাশ থেকে পড়লাম! ঢাকা ১২০ টাকা হলে বরিশাল কেন ৬০ টাকা হবে! গতকাল আমার উপজেলা সদরে ভ্যানে দেখি ডাকতেছে ২ কেজি ১০০ টাকা করে। কি বলবেন? ঢাকা শহরে ফেলের দোকানে, বেশি একটা দরদাম করতে হয়না জানতাম। কিন্তু বিশ্বাসের জায়গাটা নষ্ট হয়ে গেলো। এটা হলো রাত একটু বেশি হওয়ার, উনার সুযোগ সন্ধানী বিজনেস।

এই সুযোগ সন্ধানী আরেক ব্যাবসায়ীর অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার নিজ ইউনিয়ন এ লোকাল বাজারেও। একদিন শুক্রবার ১২.৩০ ফল কিনতে গেলাম। পুরো বাজারে ১ জন দোকানদার, দোকান খোলা রেখেছে। বাকিরা ছিলনা। তো কমলা নিলো ২৪০ টাকা কেজি। কিন্তু তার আগের দিন বিকালেও অন্য দোকান থেকে কিনেছি ২২০ টাকায়। আবার পরের দিন বিকালেও কিনেছি ২২০ টাকা। শুধু ঐ দোকানে ২৪০ টাকায় কিনতে হল অন্য দোকান বন্ধ তাই। উনি সুযোগে ২০ টাকা করে অতিরিক্ত লাভ করে নিলো।

এই হলো আমাদের গর্বের ৮৫% মুসলিম দেশের, ব্যাবসায়ীদের চরিত্র। সবাই সুযোগ পেলে অন্যের দোষ খুজি। কিন্তু কেউ নিজ পবিত্র পেশা ঠিক করে পালন করে না। আমরা যদি প্রতিটি নাগরিক নিজ জায়গায় সচেতন থাকতাম, তবে এ দেশটা সত্যি সোনার বাংলাদেশ হতো।

 

মোঃ আবদুর রহমান
শিক্ষক ও কলাম লেখক

সর্বশেষ - রংপুর