ভিসির বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
আবির হোসেন, ইবি প্রতিনিধি: ফুট ওভারব্রিজ ও স্পিড ব্রেকারের দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছে৷ পরে রাত ৯ টার দিকে শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের সামনে তাদের দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
এর আগে, শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় এক শিক্ষার্থী ট্রাকের ধাক্কায় আহত হন। তাওহীদ তালুকদার নামের ওই শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। পরে আহত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়।
এরপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনের মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের টুকরো, ইট-পাটকেল দিয়ে অবরোধ করে। এসময় তারা তাদের দাবি সংবলিত বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। মহাসড়কে স্প্রিডব্রেকার, ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় ফুট ওভারব্রিজ সহ বিভিন্ন দাবি জানান তারা। টানা ৩ ঘন্টার অবরোধে মহাসড়কের উভয় দিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে মালবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ে।
জানা যায়, তৌহিদ সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দিলে তার হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। তবে ট্রাকটি দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কুষ্টিয়ার মধুপুর এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ আটক করতে সমর্থ হয়। তবে চালক পালিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ফাহিম মুসাদ্দিক বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্প্রিডব্রেকারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু প্রশাসনের টনক নড়ছে না। যতক্ষণ স্প্রিডব্রেকার ও ওভার ব্রিজ করার সিদ্ধান্ত আসবে না, আমরা রাস্তা থেকে সরবো না।’
অবরোধ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এক সপ্তাহের মধ্যে স্প্রিডব্রেকারে স্থাপনের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ঘটনাস্থলে এসে লিখিত আশ্বাস দেওয়ার দাবি জানান। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করে।
এসময় তারা সেখানে উপাচার্যকে এসে আশ্বাসের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। বিক্ষোভ চলাকালে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিক আরাফাত ও সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে। বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকজন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীকে বাংলোর ফটকে কয়েকদফা লাথি মারতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ইবি থানার ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, ’ঘটনা শোনার পর থেকে ঘটস্থালে আছি আমরা। ভাঙচুর যেন না করে, আন্দোলনকারীদের অনুরোধ জানিয়েছি। ধাক্কা প্রদানকারী ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানিয়েছি। অতিদ্রুত বিষয়টি সমাধান করে জনভোগান্তি কমাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি।’
আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সাথে দেখা করেন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আপনাদের দাবির সাথে আমি একমত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। আশা করি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে স্প্রিডব্রেকারের কাজ শুরু হবে।’