বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন গাজীকে (৪৮) রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক গুরুতর রক্তাক্ত আহত করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্তরা ইউনিয়নের উড়বুনিয়া এলাকার বিন্দু চৌকিদারের ছেলে বাপ্পি এবং একই এলাকার বাদল চৌকিদারের ছেলে হাসিব।
অভিযোগে জানা গেছে, রোববার রাত ৮ টার সময় স্থানীয় বাপ্পি (২৪) ও হাসিব (২২) নামের দুই কিশোর গ্যাং এর নেতৃত্বে চালিতাতলী বাজার থেকে দেলোয়ার গাজীকে ধরে নিয়ে একটি মাঠে তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে বাপ্পিকে ‘আব্বা আব্বা’ ডাকিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দেলোয়ার গাজীকে ঘিরে কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন একটি লোহার পাইপ দিয়ে তার শরীরে উপর্যুপরি আঘাত করছে। এ সময় আহত দেলোয়ার গাজী বলে ‘বাপ্পি আমারে আর মারিস না’। এ সময় বাপ্পি নামের ওই যুবক তাকে ‘আব্বা’ ডাকতে বলছেন। মারধর থেকে রেহাই পেতে দেলোয়ার গাজী তখন ‘আব্বা আব্বা’ বলে ডাকছেন।
ভুক্তভোগী শ্রমিক লীগ ও যুবলীগ নেতা দেলোয়ার গাজী বলেন, বাপ্পি ও হাসিবের নেতৃত্বে চালিতাতলীতে একটি কিশোর গ্যাং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসার পাশাপাশি ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড করে ওই বাপ্পি ও হাসিব গ্যাং গ্রুপ। এরা মাদক পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনতাই করে। আমি এসবের প্রতিবাদ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে রোববার রাত ৮টার দিকে প্রথমে কথা বলার জন্য বাজার থেকে আমাকে পাশের একটি মাঠে ধরে নিয়ে যায়। পরে বাপ্পি, হাসিবসহ ৭-৮ জন যুবক মিলে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে আমাকে এলাকা ছাড়তে বলে। ওই সময় আমার জীবন বাঁচাতে আমাকে যা যা শিখিয়ে দিয়েছে আমি তখন তাই করেছি।
দেলোয়ার গাজী আরও করে বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছি। সুস্থ হলে আইনের আশ্রয় নিব।
এদিকে গত বছরের অক্টোবর মাসে সুমন নামের এক যুবককে একই প্রক্রিয়ায় ধরে নিয়ে চালিতাতলী নদীর পাড়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে বাপ্পি হাসিব। এ সময় সুমনকেও কান ধরে ওঠবস করিয়ে ভিডিও ধারণ করে বাপ্পি ও হাসিব গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা।
ওই ঘটনার ভুক্তভোগী চালিতাতলী এলাকার মো. সুমন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাপ্পি ও হাসিব এলাকায় মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করে কান ধরে ওঠবস করিয়েছিল বাপ্পি ও হাসিব গ্যাং। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাপ্পি ও হাসিব গ্রেফতার হয়নি।
এসব বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন কি তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ওসি আলী আহম্মেদ যুগান্তরকে বলেন, দেলোয়ার গাজীকে মারধরের একটি ঘটনা শুনেছি। এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ বা মামলার জন্য কেউ আসেনি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।