গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনা ঘটেছে। ওই তরুণীর বাবা পুলিশ কর্মকর্তা। এ ঘটনার পরদিন ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার বড় মেয়ে (২০) ও ১৫ বছরের ছোট মেয়েকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তারের পর বড় মেয়ে বর্তমানে কারাগারে ও তার ছোট বোন যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আছেন।
জানা গেছে, অনেকটা জোর করে মেয়েকে (২০) বিয়ের নিবন্ধনের জন্য স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিলেন বাবা। এর তিন মাস পর ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি। তবে কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করলেই বিপত্তি বাধে। মেয়ের মুখে কবুল শোনার জন্য ঘরের ভেতরে ঢুকলেই বাবাকে ছুরিকাঘাত করেন ওই তরুণী। এতে পণ্ড হয়ে যায় বিয়ের আয়োজন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী অনেক আগেই মারা গেছেন। তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে পীরগাছা উপজেলার একটি গ্রামে থাকতেন। তিন মাস আগে পুলিশ কর্মকর্তার বড় মেয়ের সঙ্গে নৌবাহিনীতে কর্মরত যুবকের বিয়ের নিবন্ধন করানো হয়। এই বিয়েতে ওই তরুণীর মত ছিল না। অনেকটা ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে নিবন্ধনে স্বাক্ষর করানো হয়েছিল। এরপর গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যথারীতি রাতে নির্ধারিত সময়ে বরযাত্রীও চলে যান ওই বাড়িতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাজী বিয়ের পড়ানোর সময় কনে ‘কবুল’ শব্দটি বলছিলেন না। একপর্যায়ে কনে ওই ঘরে উপস্থিত সবাইকে বাইরে যেতে বলেন এবং তার বাবাকে ঘরে আসতে বলেন। এ সময় বাবা ঘরে ঢুকলে কনে হঠাৎ তার বাবাকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তার চিৎকারে বাইরে অপেক্ষমাণ লোকজন ছুটে আসেন। পরে পুলিশ কর্মকর্তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মুহূর্তেই বিয়ের আনন্দ আয়োজন বিষাদে পরিণত হয়। তৎক্ষণাৎ সঙ্গে আসা লোকজন নিয়ে বর বিয়ের আসর থেকে দ্রুত সটকে পড়েন।
খবর পেয়ে পীরগাছা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার দুই মেয়েকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন এ ঘটনায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা বাদী হয়ে দুই মেয়েসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই মামলায় দুই মেয়েকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রংপুরের পীরগাছা আদালতে পাঠালে আদালত বড় মেয়েকে কারাগারে ও ছোট মেয়েকে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন।