বিএনপির ‘ডেডলাইন ১০ ডিসেম্বর’ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে আলোচিত। কী হবে এদিন, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন। রাজনীতির মাঠে এ ‘ট্রাম্পকার্ড’ প্রথম খেলেন বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান। গত ৮ অক্টোবর ঢাকার এক সমাবেশে তিনি হঠাৎ ঘোষণা দেন, ‘১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়।’
তার এমন বক্তব্যে শুরু হয় তোলপাড়। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া যেখানে রাজনীতির মাঠেই নেই, সেখানে তার কথায় দেশ চলবে—এমন বক্তব্যে নড়েচড়ে বসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও। তবে সেখানেই থেমে থাকেনি বিএনপি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আমানউল্লাহ আমানের সুরে বক্তৃতা করেন।
পাল্টা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারাও। হঠকারী কোনো কর্মসূচি করা থেকে বিরত না থাকলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বসে থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে অনড় বিএনপিও। তারা ঢাকার রাজপথ দখলের বার্তা দিচ্ছেন সভা-সমাবেশে। ফলে প্রশ্ন একটাই- কী হতে চলেছে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হওয়া ১০ ডিসেম্বরে?
বিএনপির তর্জন-গর্জন, আওয়ামী লীগ-যুবলীগের পাল্টা হুঁশিয়ারি—দুপক্ষের এমন বিপরীতমুখী অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ১০ ডিসেম্বর ঘিরে সতর্ক পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। তৎপরতা বাড়াচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। চলতি মাসের শেষের দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে দফায় দফায় বৈঠক হতে পারে বলেও জানিয়েছে একটি সূত্র। বৈঠকে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তবে আন্দোলন-সংগ্রাম বা গণসমাবেশের নামে রাজনৈতিক কোনো দল সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও গাড়িতে আগুন দিলে কঠোর অবস্থানে যাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ লক্ষ্যে এরইমধ্যে দেশজুড়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে সংস্থাগুলো।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বর সামনে রেখে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডিএমপির সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের ছুটি না নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। বিশেষ করে যারা আগেও জ্বালাও-পোড়াওয়ে জড়িত থাকার অভিযোগের নাশকতার মামলাভুক্ত তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হতে পারে। সবমিলিয়ে ওইদিন সহিংসতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।