ইন্দ্রজিৎ টিকাদার, বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি:
“চালু হলো ই-নামজারি, দালাল বাটপারদের মাথায় বাড়ি” সরকারের এই শ্লোগান বাস্তবে রূপ দিতে বটিয়াঘাটা উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহমেদ নানা মুখী পরিকল্পনা ঘোষণা করে ইতিমধ্যে কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক প্রসংশিত হয়েছেন ।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল, সম্পূর্ণ ঘুষ ছাড়া ভূক্তভোগী তার নিজের কাজ নিজেই করবেন । এতে করে ভূক্তভোগী সম্পূর্ণ টাকা ছাড়া নিজের কাজ নিজে করে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি ভূক্তভোগী দালাল মুক্ত ভাবে নিজের কাজ নিজে করে ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে পারছেন । ইতিপূর্বে ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম দালালদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল ।
বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহমেদ যোগদানের পর থেকে ভূমি দালাল বাটপারদের দৌরাত্ম নির্মূল করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন । তিনি যোগদানের পর থেকে দালাল নির্মূল করতে ভূক্তভোগীর ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম নিজের করার কথা বলেছেন । অর্থাৎ ভূমি সংক্রান্ত শুনানীতে ভূক্তভোগী স্ব-শরীরে অংশগ্রহণের মাধ্যমে উপস্থিত থাকতে হবে । কোন দালালদের মাধ্যমে শোনানী অংশগ্রহণ করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে । যার ফলশ্রুতিতে কিছুটা দালাল মুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা ।
তবে ইতিপূর্বে ভূমি অফিসের যাবতীয় কাজকর্ম দালালদের দ্বারা পরিচালিত হতো এবং দালালরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ই-নামজারি কেস প্রতি ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে কেস প্রতি স্ব-স্ব স্বাক্ষরের মালিকদের ৫ ‘শত টাকা থেকে ১ টাকা পরিশোধ করে তার পর দালালের লাভের টাকা অর্জন করতে সক্ষম হতো । এছাড়াও খতিয়ানে ভিপি তালিকা ভুক্ত থাকলে বা অন্য কোন সামান্য ত্রুটি থাকলে স্ব-স্ব স্বাক্ষরের মালিকদের মূল্য বৃদ্ধি করে ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা নেয়া হতো বলে জানা গেছে । সে ক্ষেত্রে দালালরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অধিক টাকা হাতিয়ে নিতো ।
ভূমি অফিসে বর্তমানে উচ্চ পর্যায়ের দালাল মুক্ত হলেও নিচের দিকে স্ব-স্ব স্বাক্ষরের মালিকদের ওই একই নিয়ম চালু রয়েছে বলে একাধিক ভূক্তভোগী মারফত জানা গেছে । ইতিপূর্বে পূর্বে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বিগত সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মোঃ রাশেদুজ্জামান দালাল নির্মূল করতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেল- জরিমানা আদায় করে দালাল কিছুদিন মুক্ত হয়েছিল । তিনি অন্যত্র বদলি হলে ভূমি অফিসেআবারও দালাল বাটপারদের বৃদ্ধি হতে শুরু করে । বর্তমানে সহকারী কমিশনার ভূমি যোগদানের পর থেকে উপরে দিকে দালাল মুক্ত হলেও নিচের দিকে চলছে দালাল বাটপারদের দৌরাত্ম ।
এব্যাপারে উপজেলা সহকারী ( ভূমি) এম আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহমেদ এপ্রতিবেদককে বলেন, যেহেতু আমি নিজে কোন অনৈতিক সুবিধা গ্ৰহন করি না,তাই প্রতিটি ভূক্তভোগী ভূমি অফিসে নিজের কাজ নিজে সম্পূর্ণ অনৈতিক সুবিধা(টাকা) ছাড়া করবে এটাই প্রত্যাশা । সে কারণে ই-নামজারি শুনানিতে কোন প্রকার দালাল ছাড়া ভূক্তভোগীকে নিজেই অংশগ্রহণ করতে হবে। সে জন্য সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করি ।