স্টাফ রিপোর্টার: বিদেশের মাটিতে সক্রিয় রয়েছে দেশবিরোধী চক্র। নামে বেনামে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে সম্প্রতি সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনের নামে হলেও অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন বিএনপি-জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।
এ নিয়ে স্থানীয় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সহ কমিউনিটিতে চলছে কানাঘুষা। অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে’র ব্যানারে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সামনে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও জামায়াতের সেক্রেটারী মিয়া গোলাম পারওয়ার সহ বিএনপি জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়।
শুধু তাই নয়, কর্মসূচী শেষে বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাছে খালেদা জিয়া ও জামায়াত নেতার মুক্তির দাবীতে দেয়া হয় স্মারকলিপি। এর মূলে রয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি সিলেটের বাসিন্দা এম এ মালিক, আমার দেশ পত্রিকার নির্বাসিত সাংবাদিক ওলীউল্লাহ নোমান, সুনামগঞ্জের বাসিন্দা বিএনপি নেতা আশিকুর রহমান আশিক ও ছাতকের বাসিন্দা নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে’র সভাপতি মুসলিম খান। এদিকে এ বিষয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, দেশের ক্ষতি করতে বিএনপি-জামায়াত বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। দেশবিরোধী অপপ্রচার চালাতে বিএনপি-জামায়াত বিদেশে ৮টি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকার এ সব অপপ্রচার বন্ধে সত্য তথ্য তুলে ধরে দেশের ভাবমূর্তি ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পিআর ফার্মকে দায়িত্ব দিয়েছে।
বিএনপি-জামায়াতের লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে আইসিটি এ্যক্টের বিরুদ্ধে প্রচারনা চালানোর জন্য লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছিল। এর পর মার্কিন কংগ্রেসে আইসিটি এ্যক্ট বিরোধী প্রচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করতে একটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দেয় জামায়াত। এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানানো হয়, সাউথ এশিয়ান পলিসি ইনিশিয়েটিভ নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন আওয়ামী সরকার বিরোধী সংগঠন। আন্তর্জাতিক গুম খুন দিবস উপলক্ষে বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যুক্তরাজ্য থেকে সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকে, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে সহ ১৭টি সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে যুদ্ধাপরাধীদের অভিযোগে ফাঁসি দেওয়ার পর থেকে বিরোধীদলীয় প্রচারনায় এগিয়ে এসব সংগঠন গুলি। এসব সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বিএনপি-জামায়াতের উচ্চশিক্ষিত নেতা কর্মী।
গত ১০ অক্টোবর নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে এই সংগঠনটি লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিশাল বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। সেখানে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম,এ মালিক, স্কাইপ কেলেঙ্কারির অভিযোগে পলাতক সাংবাদিক ওলীউল্লাহ নোমান, সংগঠনের সভাপতি মুসলিম খান এদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ হাইকমিশনে স্মারকলিপি প্রদান করে। এছাড়াও এসব অনুষ্ঠানে সরকার বিরোধী বক্তব্য ও স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সংগঠনের সহ সভাপতি মোঃ আসয়াদুল হক, মির্জা এনামুল হক, আলী হোসাইন, আরিফ আহমদ, এবাদুর রহমান, মোর্শেদ আহমদ খান, মোঃ আমিনুর রহমান, ফজল আহমদ, মোঃ আলিম উদদীন, রফিক আহমদ, মোঃ নিপা বেগম, সুমেনা বেগম, মোঃ রাসেল মাহমুদ ও মোঃ মিফতা উদদীনসহ শতাধিক বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মী এসব কর্মসূচীতে বক্তব্য দেন।
স্মারকলিপিতে বিএনপি-জামায়াতের দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবী জানানো হয়। বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচনে সকল দলের অংশ গ্রহণে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও দেশে গনতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এদিকে, আওয়ামীলীগ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের ক্ষতি করার জন্য কাউকে নিয়োগ ও দেশ বিরোধী অপপ্রচার করা হলে দেশবাসী কখনোই তা মেনে নেবে না। বাংলাদেশের সাফল্য জানান দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি বিশেষ উইং তৈরি করেছে সরকার।
এই বিশেষ উইং এর মাধ্যমে দেশ বিরোধী অপপ্রচার কারীদের তালিকা তৈরি করে বাংলাদেশী হাইকমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার কারীদের ছাড় দেবেনা আওয়ামী লীগ। অনতিবিলম্বে তালিকা তৈরি করে তাদের কে দেশে এনে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান তৃনমূল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা।