দেশে আর কোনো বিনাভোটের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিতে নিমজ্জিত আওয়ামী লীগ এখন লম্বা লম্বা কথা বলে। তারা বলেন, নির্বাচন হবে সংবিধান মোতাবেক। অথচ সংবিধান তো তারাই কেটে-ছেঁটে শেষ করেছে। কিন্তু এ দেশে আর বিনাভোটের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। পাড়া-মহল্লায়, ঘরে ঘরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ সরকারকে এবার পদত্যাগ করতেই হবে।’
বুধবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী যুবদল এ সমাবেশের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনির্বাচিত, গণবিরোধী ও দেশবিরোধী সরকার ভয় দেখাতে অতীতে র্যাব দিয়ে গুম করেছে, এখন ডিবি দিয়ে গ্রেফতার করাচ্ছে। ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। জনগণের যৌক্তিক দাবিকে কখনও অস্ত্র দিয়ে দাবিয়ে রাখা যায় না, অতীতেও যায়নি। স্বৈরশাসক হিটলার পারেননি। বিষপাণ করে মারা গেছেন তিনি। ইরাকের সাদ্দাম হোসেন মাটির নিচে গুহায় লুকিয়েও বাঁচতে পারেননি। মুসোলিনি পারেননি, আইয়ুব-ইয়াহিয়া ও ভুট্টো পারেননি। এ আওয়ামী লীগ সরকারও পারবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ সরকারে অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। কারণ এ দেশে হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টে ভোট চুরি হয়।’ ফখরুল বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম করা হচ্ছে। হাজারও নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। থানায় নিয়ে পায়ে গুলি করা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে কী কোনো ভয় সৃষ্টি করাতে পেরেছেন? কোনো লাভও হয়নি। আওয়ামী লীগ মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে মেগা দুর্নীতি করছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সরকারকে বিদায় করতে ঈদের পরে, ঈদের আগে বলে কোনো কথা নেই। এদের কে যখন যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যেখানে বাধা আসবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আঘাতের বিপরীতে পাল্টা আঘাত করতে হবে।’
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপির হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া যাবে না যারা বলছেন, এরা কারা? এরা তো দিনের ভোট রাতে কেটে ক্ষমতায় বসে আছে। আমরা তো বলিনি বিএনপির হাতে ক্ষমতা তুলে দেন, বিএনপিকে ভোট দেন। আমরা বলছি, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেন। আওয়ামী লীগ যে ক্ষমতায় থাকবে না, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন সত্যিকার অর্থে স্বাধীন দেশ নয়। দেশ এখন বৃহত্তর কারাগার। এখানে মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। ভোটাধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র নেই। আমরা কারও কাছে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি চাই না। আমরাই নেতাকর্মীদের মুক্ত করবো। যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের পরিবার বিচারও পাবে। যারা এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত, এরা রেহাই পাবে না।’
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।