ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পূর্ব শত্রুতার জেরে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাল চত্ত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শরীফুজ্জামান শোভন আহত হয়েছে। পরে দুপুর দেড়টায় শারিরীক নির্যাতন, মাথায় আঘাত ও হত্যার হুমকির অভিযোগ তুলে নিরাপত্তাসহ বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে শোভন বলেন, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ক্লাস শেষে তিনি ক্যাম্পাসের ডায়না চত্ত¡রের দিকে যান। ঠিক সেই মুহূর্তে ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের মাসুদের নেতৃত্বে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সজিব, বাংলা বিভাগের তাওহীদ তার উপর অতর্কিত হামলা করে কিল ঘুষি লাথিসহ রাস্তার উপর ফেলে মাথায় আঘাত করতে থাকে। এতে তার মাথায় মারাত্মকভাবে ক্ষতি হয়েছে। নাক-মুখ হাতের আঙ্গুল জখমসহ রক্তপাত হয়েছে এবং তার হাতঘড়ি, চশমা, মানিব্যাগ তারা কেড়ে নিয়ে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন করে। এমনকি তারা বলতে থাকে, ‘তোকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আর না দেখি, তোকে দেখলে মেরে ফেলবো’।
এবিষয়ে শোভন বলেন, আজ অতর্কিতভাবে তারা আমাকে মারধর করে। পরে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করি। এসময় কত্যর্বরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুল হাসান বলেন, কিল ঘুষির কারণে মাথার চামড়া আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। আঘাতের কারণে মাথায় কোনো সমস্যা হয়েছে কি-না এজন্য তাকে সিটিস্ক্যান করতে বলেছি। সিটিস্ক্যান না করা পর্যন্ত এখন কিছু বলতে পারবো না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যক্তিগত কার্যকালাপ ও মতের অমিলের কারণে শোভনের সাথে অভিযুক্ত ওলিউর রহমান ওলির দূরত্ব দীর্ঘদিনের। একজনের সাথে আরেকজন কথা বলেন না। গত ২৫ মে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় ওলি শোভনকে উদ্দেশ্য করে আজেবাজে কথা বললে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির একপর্যায়ে ওলিকে চড় মারেন শোভন। তখন ওলি সেখান থেকে চলে যান। তার একটু পরেই সে তাঁর বন্ধু মাসুদকে নিয়ে শোভনকে মারতে আসে। তখন শোভনের সাথে তার বিভাগের বন্ধু সাকিব হাসানও উপস্থিত ছিলেন। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত উভয় পক্ষের মাঝে বিষয়টি সমাধান করে দেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাসুদ রানা ও তাওহীদ তালুকদারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে অপর অভিযুক্ত সজিব ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না বলে জানালেও তিনি মারামারিতে সক্রিয় ছিলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তিনি বলেন, ঘটনার সময়ে আমি হলে ছিলাম। আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আমি আমার গেস্টের জন্য নাস্তা আনতে একবার ঝাল চত্বরে গিয়েছিলাম। তখন মারামারি হয়েছে কিনা তা জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। সোমবার ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরিয়াল বডির যৌথ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।