ইবি প্রতিনিধি:
জিএসটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৩-২৪ উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউনিট সমন্বয়কারী অফিস ও ভর্তির সকল কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ভবনে রাত আটটার পর উক্ত ইউনিটের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞা না মেনে ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের বাঁধা উপেক্ষা করে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে তালাবদ্ধ ভবনে প্রবেশ করার লিখিত অভিযোগ করেছেন আনসার সদস্যরা। আনসারদের অভিযোগসহ প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা থেকে নোট পেয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) প্রক্টর অফিস থেকে প্রশাসনের অবগতির জন্য অভিযোগ রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্বদ্যিালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ঝিনাইদহ আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার ফজলুল হক আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে এবং কুষ্টিয়া আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার আলতাফ হোসেন ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু শিবলী মো. ফতেহ আলীর বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৬ এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে এবং রাত ১১টায় ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী অনুষদ ভবনে প্রবেশ করেন। ভবনে প্রবেশ করতে গেলে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাদেরকে প্রবেশ না করার অনুরোধ করলেও আনসারদের কথা অমান্য করে তারা প্রবেশ করেন। প্রশাসনিক সিন্ধান্ত অমান্য করে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এমতাবস্থায় জরুরী নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন তাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ঝুকিপূর্ণ বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘ভবনে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমি জানতাম না। কিছু জরুরি কাগজপত্র অফিসে ফেলে গিয়েছিলাম। পরে সেগুলো নিতে অফিসে গেলে আনসাররা বলেছিল ভবনে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পরে আমি প্রক্টরকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে কাগজপত্রগুলো নিয়ে চলে আসি। প্রশাসন যদি এটা নিয়ে কোনো কিছু করে তাহলে সে অনুযায়ী আমি আমার মন্তব্য জানাবো। আপনাদের কাছেও (গণমাধ্যমকর্মী) বিষয়টা গেছে এতে আমি একটু অবাক হচ্ছি।’
ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী বলেন, ‘প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের লিখিতভাবে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমি রাত আটটার দিকে বিভাগীয় কাজে অফিসে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভবনে প্রবেশের সময় দায়িত্বরত আনসাররা কিছুই বলেনি। পরে আমার রুমে একজন আনসার এসে বলে যে, প্রক্টর স্যার অনুষদ ভবনে কাউকে ঢুকতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু আমি তৎক্ষনাৎ প্রক্টরকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আপনি যেহেতু বিভাগের কাজ করছেন। আপনি থাকেন, কোনো সমস্যা নেই।’’ ’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে ভবনে প্রবেশ নিষেধ ছিল। আনসাররা বলার পরও ওই দুই শিক্ষক জোর করেই ভেতরে ঢুকেন। আমাকে যখন তারা ফোন দেন তখন তারা অলরেডি ভেতরে ঢুকে পড়েছেন। পরে ২৭ এপ্রিল আনসারদের অভিযোগসহ নিরাপত্তাকর্মকর্তা আমাকে একটি নোট পাঠায়। আমি সোমবার (২৯ এপ্রিল) এটিকে রেজিস্ট্রার বরাবর প্রেরণ করেছি। কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। তবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপার হওয়ায় প্রশাসন বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বসহকারে নিয়েছে।’