ইবি প্রতিনিধি: পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎসব। দিনটি সকল বাঙালি জাতির ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। পহেলা বৈশাখ মানেই ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’। চিরচেনা সেই সুমধুর গান নিয়ে প্রতিবছর আমাদের মাঝে আসে বাংলা বর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত।
দিবসটি উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বয়ছে ভিন্ন ধরনের উচ্ছাস। ‘বরিষ ধরা মাঝে-শান্তির বারি’ প্রতিপাদ্যে জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে এদিন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মুক্তির আনন্দে মিলবে ইবি শিক্ষার্থীরা। মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতির কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। তাদের নিপুন হাতের কারুকাজ দিয়ে বাঙালী জাতির ইতিহাস ইতিহ্য ও নিজস্ব সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করছেন তারা।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সবাই মুখোশ, পাখি, চালন, কুলা, কলসেতে নকশা তৈরির কাজে মগ্ন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তারা গান, গল্প ও আড্ডায় মাতিয়ে রাখছেন সবাইকে।
জানা যায়, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে এদিন মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। যার ফলে নববর্ষকে বরণ করতে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা কিছুদিন ধরেই একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের শোভাযাত্রায় মূল আকর্ষণ থাকবে- ফোক ডিজাইনের বিভিন্ন ধরণের মুখোশ। যেমন, বাঘ, পেঁচা পাখি, তুহিন পাখি সহ বিভিন্ন প্রতিকৃতি। এছাড়া চালন, কুলা, কলসি, মাছ ধরার পলুইয়ের উপস্থিতি ভিন্ন ভিন্ন বার্তা বহন করবে। একইসাথে ২০ ফিট উচ্চতার বিশালাকৃতির একটি পাখি থাকবে মূল আকর্ষণ হিসেবে।
সদ্য ক্যাম্পাসে আসা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে কেমন মজা হবে তা এখনো বুঝতে পারছি না। নববর্ষ উদযাপন নিয়ে খুবই এক্সাইটেড আমরা। কেননা এর আগে এভাবে নিজ হাতে এসব কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়নি। তবে বড় ভাই, আপু ও শিক্ষকদের সঙ্গে কাজ করতে ভালোই লাগছে।’
চারুকলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক হোসেন বলেন, ‘নববর্ষ উৎযাপনের নান্দনিক কাজ গুলো আমরা খুব উপভোগ করি। শিক্ষকরাও নিজ নিজ জায়গা থেকে খুবই সাহায্য করছে। আশা করছি এবারও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে নববর্ষ উদযাপন করা হবে।’
চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ বাঙালির শেকড়কে অনুসরণ করে। এবছর বিভাগের সকল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতায় এত সুন্দর আয়োজন চলছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। পাখি শান্তির প্রতীক সুতরাং বিশাল আকৃতির পাখির মাধ্যমে শান্তির বার্তা পৌঁছে যাক প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে এই আশাও ব্যক্ত করেন তিনি।’
এদিকে, শুক্রবার সকালে প্রসাশন ভবন থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বের হবে। এর আগে আনন্দেও প্রতীক বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্ভোদন হবে। এ সময় উপস্থিত থাকবেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগ, হল ,বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনসহ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সকল সংগঠন অংশ নেবে।