জুবায়ের খন্দকার, ময়মনসিংহঃ- বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)- এর ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ে বিআরটিএ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত না হয়েও রিতিমত কর্মকর্তা বনে গেছেন দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি।
এই স্বঘোষিত কর্মকর্তারা হচ্ছে স্পিড গভর্নর সিল মেকানিক এম. কামাল উদ্দিন ও সহকারী সিল মেকানিক বিজন চন্দ্র সরকার।
উল্লেখিত এই দুই ব্যক্তির নামে অভিযোগ উঠেছে যে সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী না হয়েওতারা বিআরটিএ কার্যালয়ে নিয়মিত অফিস করছেন। এই দুই স্বঘোষিত কর্মকর্তা এমন ব্যস্ততা দেখান যে কারো মনে হবে যেন সত্যি এরা বিআরটিএ’র নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। আর নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মতোই তাদের টেবিলে ফাইলের স্তূপ বানিয়ে রেখে টেবিলে ও চেয়ার বসে তারা নিয়মিত সেবা গ্রাহীতাদের কাছ থেকে লোক চক্ষুর সামনেই খুলাখুলিভাবে ঘুষ লেনদেন করছেন।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক বিআরটিএ অফিস কর্মরত আছেন এমন একজন বলেই ফেললেন বিআরটিএ’র অফিসে অনেক কিছুই চলে প্রভাবশালী এই ২ব্যক্তির আঙ্গুলের ইশারায়। ফলে যখন যে কর্মকর্তা এই অফিসে যোগ দেন তখন তাদের প্রত্যক্ষ মদদেই চলেন এই ২ ব্যক্তি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্বঘোষিত কর্মকর্তা এম. কামাল উদ্দিন আমাদেরকে বলেন-আমি প্রায় ১৫ বছর ধরে এই অফিসে স্পিড গভর্নর মেকানিক হিসেবে কাজ করছি। অফিস কর্তারাই আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমার মতো বিজন চন্দ্র সরকারও সহকারী স্পিড গভর্নর মেকানিক হিসেবে কাজ করছেন। তবে নিয়োগ সংক্রান্ত কোন কাগজ দেখতে চাইলে তিনি আমাদের কাছে অপারগতা প্রকাশ করেন।
অপর আরেকজন স্বঘোষিত কর্মকর্তা বিজন চন্দ্র সরকার আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান।
বিআরটিএ’তে আশা সেবা গ্রহীতারা অভিযোগ করে বলেন- বিআরটিএ’র মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী না হয়েও এরা কীভাবে ১৫ বছর ধরে নিয়মিত অফিস করছেন এটা কিভাবে সম্ভব। এছাড়াও সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে আবেদন করে হয়রানিমুক্ত সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন নেই বলেও জানান সেবা আসা ভুক্তভোগীরা।
এদিকে ওই দুই স্বঘোষিত ব্যক্তির নিয়োগপ্রপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এএসএম ওয়াজেদ হোসেনর সাথে যোগাযোগ করেও তার দেখা মেলেনি।
অপর দিকে মোটরযান পরিদর্শক আব্দুল খবিরুল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন-আমি ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই তারা এখানে কাজ করছে। তবে আমি শুনেছি বিজন চন্দ্র কামাল উদ্দিনের লোক।
বিআরটিএ ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন বলেন-তারা অনেক আগে থেকেই এই অফিসে কাজ করছেন। তাদের সরকারি কোনো নিয়োগপ্রাপ্ত না থাকলেও তাদেরকে কাজ করবার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে আমি জানি। তা হলে তারা নিয়োগপ্রাপ্ত না হয়েও কিভাবে অফিস করে জানতে চাইলে তিনি নিরবতা পালন করেন।